Showing posts with label ছবি: সংগৃহীত. Show all posts
Showing posts with label ছবি: সংগৃহীত. Show all posts

Friday, 31 January 2020

নাগরিকত্ব সংশোধন আইন CAA এবং ভারতবর্ষ ও আসাম: কিছু অপেশাদারী কথা

পর্ব-১
(CAA ও দেশ)

নাটক, প্রহসন, প্রতারণা, উগ্র সাম্প্রদায়িক এবং আঞ্চলিক বিদ্বেষ আর হিংসা, সর্বোপরি ভোট বাক্সের রাজনীতি যাদের প্রতিবাদের হাতিয়ার সেই বৌদ্ধিক দেউলিয়াদের প্রতি ঘৃণা নয় করুণা বোধ হয়।

একটা কথা কিছুতেই বোঝা যাচ্ছে না যে, বিপন্ন কাউকে আশ্রয় দেবার মানেই কি স্থায়ী বাসিন্দাকে উৎখাত করা ? জাতি ধর্ম নির্বিশেষে আমরা যারা নিশ্চিত জানি যে আমরা সত্যিকার অর্থেই ভারতবর্ষের বৈধ নাগরিক তাদের মাথাব্যথার কারণটা কোথায় ?

তবে একটা কথা সত্যি যে, ভারতবর্ষের জনসাধারণের সহজ মন আর মাথাকে প্রভাবিত বা বিভ্রান্ত করতে রাজনীতির জুড়ি মেলা ভার আর তার সঙ্গে জাত ধর্ম আঞ্চলিকতার ধুনো থাকলে তো জনদরদী জননেতাগণের কেল্লা ফতে! কারণ, তারা খুব ভালোভাবেই অবগত যে, তাদের মুখে বলা একটা কথাই তাদের অনুগামীদের ভড়কে দিতে যথেষ্ট । কিন্তু, তাই বলে সত্যিই কি আমরা নিজেদের নূন্যতম কান্ডজ্ঞান আর বিচারবুদ্ধিকেও জলাঞ্জলি দিয়ে দেব?

দেশভক্তি আর 'আমার দেশ' মার্কা সংলাপের মেকী দেখনদারির বাইরে বেরিয়ে বাস্তবিকতাটাকে বোঝার দায় বা না বুঝতে চাওয়ার কুপরিণাম কিন্তু আমাদেরকেই ভোগ করতে হবে বা হয়।

সম্প্রতি নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে দে়শে 'প্রতিবাদের' যে উন্মত্ত প্রদর্শন শুরু হয়েছে, তার নেপথ্যের কারণটা কি আমরা আদৌ সঠিকভাবে জানি? উক্ত বিলটিকে সংবিধান বিরোধী এবং দেশের সংখ্যালঘু অর্থাৎ কিনা মুসলিম সম্প্রদায়(যদিও ভারতবর্ষে মুসলিমরা কখনোই সংখ্যালঘু নন বরং দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনসংখ্যা)বিরোধী বলে সাধারণ মানুষকে পরিকল্পনামাফিক উস্কে দেবার কারণ বহুবিধ ও তার ভিত্তিও রাজ্যভেদে আলাদা।
  আমরা সেই জটিলতার বিশ্লেষণে না গিয়ে বরং সুস্থ সহজভাবে বিষয়টা বোঝার চেষ্টা করি।

CAB(Citizenship Amendment Bill) 2019 যা বর্তমানে CAA(Citizen Amandment Act) হিসাবে  বলবৎ হয়ে গেছে  তাতে কোথাও এমন কোন clause বা শর্তের  উল্লেখ নেই যা থেকে মনে করে নেওয়া যেতে পারে যে, বিলটি সংবিধান বিরোধী বা ভারতের মুসলিম জনসাধারণের  নাগরিক অধিকার ধ্বংসকারী। খুব বেশী বিস্তারিত তথ্য আলোচনা না করে সহজ সত্যগুলো বুঝতে  পারলে হয়তো এই অন্ধ সংশয় ও নিরাপত্তাহীনতার  যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে পারি কিছুটা হলেও।

(১) যে অপ্রিয় সত্যিটাকে আমরা স্বাধীনতার সময় থেকে জেনেও না জানার না বলার ভান করে এসেছি সেটাকে মেনে নিয়ে তার নিরিখে ও দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিচার করলে দে়খতে পারি হিন্দুস্থানের হিন্দুরা নিজেদের স্বার্থে কোনদিনই তৎপর হয়নি, এমনকি ভারতবর্ষের স্বাধীনতাটাই এসেছিল জিন্নার 'Two Nations Theory' র উপর ভিত্তি করে, যেখানে ভারত দ্বিখণ্ডিত হয়েছিল অখন্ড ভারতকেই খুবলে নিয়ে পাকিস্তানকে পৃথক মুসলিম রাষ্ট্র তৈরী করে। পাকিস্তানের তথাকথিত 'কায়দে আজম' মহম্মদ আলি জিন্নার আবদার রাখতে। অবশ্য মোতী গাজীর সুপুত্র জনাব নেহরুরও বাদশা হবার খোয়াইশ ছিল বৈকি। অগত্যা স্নেহান্ধ বাপু দু়ই ছেলেকেই খুশী করতে গি়য়ে হিন্দু মুসলিম নির্বিশেষে কোটী কোটী ভারতীয়দের মা কেই দুটুকরো করে নিতে দুই ছেলেকে  সম্মতি দিলেন। বলা যায় সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ নামক ক্যানসারে বৃক্ষের চারা রোপণ হল যার বিষ ফল আর বিষ বাতাসের জ্বালায় বিগত ৭৩ বৎসর ধরে ভারতীয়দের প্রাণ ওষ্ঠাগত।
কিন্তু, সেদিন জিন্না খুবই স্পষ্টভাবেই পাকিস্তানকে আলাদা মুসলিম রাষ্ট্র হিসাবে দাবী করে দাবীটা আদায়ও করে নিয়েছিলেন। কিন্তু, হিন্দুস্থানকে হিন্দুরাষ্ট্র দাবী বা ঘোষণা করার কথা কেউ দাবী করেন নি সাওয়ারকার ছাড়া। কিন্তু, তখন নেহরুর বা জাতির জনক(!) কারোরই সেই দাবীকে বোঝার ইচ্ছে  ছিল না । "মুসলমানের আহার যা হিন্দুর রান্নাঘরে তৈরী হবে তা খ্রিস্টানদের টেবিলে বসে খাব" এই মানসিকতা রাখা হিন্দু নামধারী 'আওলাদ এ গাজী' জহরলাল নেহরুর মতন উচ্চকোটী সেকুলারের হিন্দুরাষ্ট্রের ধারণা কেন যে পছন্দের ছিল না, সে তো সহজেই অনুমেয়। কিন্তু, বাপু যিনি কিনা জাতির পিতা তিনি কিকরে তাঁর হিন্দু সন্তানদের বেলা সেদিন অন্ধ সেজে রইলেন?
সত্যিই সেকুলার হলে কি এমন অন্ধ ধৃতরাষ্ট্র হওয়া সম্ভব ছিল?
সত্যিকারের পিতা কি করে ছেলেদের হাঁড়ি করতে সম্মতি দিতে পারে?
যদি সেদিন সত্যিই এই অসাম্যের কু উদ্দেশ্যের খেলাটা না হতো, সেকুলারিজম নয় বরঞ্চ তীব্র সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক চালটা না চালা হতো, তাহলে আজকের এই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন CAA সত্যিই দরকার পড়ত?

(২) বর্তমানে দেশের সকল সরকার বিরোধী দলগুলি এবং "আমার কোন রং নেই" বলা তথাকথিত বুদ্ধিজীবীর দল নিজেদের স্বার্থে ইচ্ছাকৃতভাবে দায়িত্ব নিয়ে সাধারণ দেশবাসীকে বিভ্রান্ত ও অস্থির করে তুলছেন এই বলে এই নতূন আইন মুসলিম বিরোধী,  অসংবিধানিক এবং এই  CAA আইন প্রণয়ন মোদী সরকারের ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র ঘোষণা করার ক্ষেত্রে প্রথম পদক্ষেপ।
হাস্যকর হাতিয়ার। সত্যিই বড় কৌতুককর CAA এর সাপেক্ষে এই ব্যখ্যাগুলো।

প্রথমেই যেটা আমাদের বোঝার সেটা হল, ভারতবর্ষ তো বস্তুতঃই হিন্দুরাষ্ট্র। ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্থান, ব্রহ্মদেশ মানে মায়ান্মারসহ  সমগ্র আর্য্যাবর্তই ছিল ভারতবর্ষ। হিন্দু কোন ধর্মের নয় পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ও প্রাচীনতম সভ্যতার নাম।
এবং সিন্ধু নদীর তীরে এই সভ্যতা গড়ে ওঠার কারণে  সিন্ধু সভ্যতার ধারক বাহক বলে ভারতবর্ষের অপর নাম হিন্দুস্থান! সেভাবে দেখলে ভৌগোলিক বিচারে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে আমরা সকল ভারতই হিন্দু । তাই নতুন করে ভারতবর্ষকে নিজেকে হিন্দুরাষ্ট্র হিসাবে পরিচয় দেবার দরকারই পড়ে না।

(৩) এবার আসি নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা CAA কেন অসংবিধানিক নয় তার উত্তরে।
স্বাধীনতার সময় থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত সেইসব দেশ ও ভারতের জনসংখ্যার অনুপাতের উল্লেখ করাটা এখানে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ছে ।
ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ হওয়া দুই ধর্মের মানুষেরই সর্বাঙ্গীণ যে অভূতপূর্ব ক্ষতি সেই সময়ে দেশের   মহান আত্মারা করেছিলেন সেটাই তো শেষ কথা নয়, বরং সেটাই ছিল শেষের শুরু।
শুরু হলো অখন্ড হিন্দুস্থান থেকেই জন্ম নেওয়া ইসলামিক রাষ্ট্রগুলিতে বসবাসকারী হিন্দু জনগোষ্ঠীর উপর নৃশংস অত্যাচার ও হত্যালীলা যা আজ পর্যন্ত ক্রমবর্ধমান।
ভারত থেকেেই বিচ্ছিন্ন হওয়া সাম্প্রদায়িক দেশগুলোর কোনটা নিজেকে ইসলামিক বলে আবার কোনটা নিজেকে গণতান্ত্রিক নামক আলখাল্লা়য় নিজেদের স্বরূপ ঢেকে রাখার ব্যর্থ প্রয়াস করে।
কিন্তু, সেই সবকটা দেশের এজেন্ডা একটাই, হিন্দু নির্মূলিকর়ণ, হয় ধর্মান্তরিত করে না হয় নির্যাতন করে তাড়িয়ে না হয় হত্যা করে।
দেশ ভাগের সময় পাকিস্তানে বসবাসকারী হিন্দু নাগরিককের সংখ্যা ছিল ১২.৯ শতাংশ, যা বর্তমানে এসে দাঁড়িয়েছে ১.৬ শতাংশে, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই জনসংখ্যা ছিল প্রায় ২২.৫ শতাংশ(শুধু সরকারী ১৯৫১ সালের পরিসংখ্যান মতে) যা বর্তমানে ১শতাংশ। কিন্তু, ভারতবর্ষে দেশভাগের সময়ে মুসলিম জনসংখ্যা ছিল মোট জনসংখ্যার ৭(৩৪ মিলিয়ন) শতাংশ যা বর্তমানে বেড়ে ১৭(২০১মিলিয়ন)শতাংশ, তা ও শুধু সরকারি হিসাবে। তবু হিন্দুস্থানই অসহিষ্ণু, Intolerant!
যাইহোক, স্বাধীনতার সময় থেকে প্রতিবেশী দেশগুলিতে এই যে হিন্দু জনগোষ্ঠীর মানুষ যারা ক্রমাগত অত্যাচারিত হতে হতে প্রাণের তাগিদে বিভিন্ন সময়ে ভারতে আশ্রয় নিতে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছেন, তাদেরকে তাদের নাগরিকত্ব দেওয়া ভারত সরকারের একান্ত কর্তব্য । মানবিকতার দায় ও বটে, যা পূরণ করতে পূর্ববর্তী সরকারগুলো বিফল হয়েছিল সদিচ্ছার অভাবে। এই অসহায় নাম গোত্রহীন হয়ে ভারতে বেঁচে থাকা শরণার্থীদের এবং অারো অন্যান্য ধর্মের মানুষরা বৌদ্ধ, জৈন , শিখ আদি যারা ভারতে বাইরে থেকে পাসপোর্টে এসে এখানেই রয়ে গেছেন ফিরে যান নি অথচ তাদেরকে কিছু সহজ পন্থায় ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়াই এই আইন বলবৎ করার উদ্দেশ্য। এই আইন কারো নাগরিকত্ব কেড়ে নেবার নয় বরং নাগরিকত্ব প্রদান করার আইন, যার মাধ্যমে ভারতে আসা শরণার্থীদের মোট সংখ্যার একটা সরকারী হিসেব পাওয়া যাবে। এর সাথে দেশের মুসলিম নাগরিকদের উপর কোন আঁচ আসার বা হিন্দু নাগরিকদের বিশেষ লাভ হবার তিলমাত্র জায়গা নেই। এটাই সংবিধান বিশেষজ্ঞরা বিশ্লেষণ করে বোঝাবার চেষ্টা করছেন। আর যে কোন সুস্থ শিক্ষিত মানুষের পক্ষে এটা বোঝা জলবৎ তরলম।

কিন্তু, না! অত সহজে তো ভারতবাসীকে এটা বুঝতে দেওয়া যাবে না। দিলে যে ভোট বাক্সে টান পড়ছে। কারণ হলো, নাগরিকত্ব সংশোধন আইন CAA এর ভারতবর্ষে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের প্রবেশ পথটা রূদ্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু, তাতে ভারতের বৈধ নাগরিকদের অসুবিধাটা কোথায়? আমি যখন ভারতের একজন বৈধ দেশভক্ত ও সচেতন মুসলিম নাগরিক তখন কি শুধু সমধর্মী হবার কারণে ভারতে চোরাপথে প্রবেশ করে, দশকের পর দশক ধরে আমারই মাতৃভূমির অন্ন সম্পদ সুবিধা ভোগ করে আমারই মাতৃভূমির বুকে ছোরা বসানো অপরাধীদের কোন ভাবেই সমর্থন করতে পারি?
আজ আমরা দেশের সত্যিকারের বৈধ নাগরিকরা যে জনসংখ্যা বিস্ফোরণ, বেকারত্বসহ আরও নানাবিধ জলন্ত সমস্যায় জর্জরিত হচ্ছি তার পিছনের কারণগুলোর মধ্যে একটি অন্যতম কারণ হচ্ছে, আমদের জাতীয় সম্পদে উড়ে এসে জুড়ে বসা এই অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের থাবা।
শুধু তাই নয়, অনেকেরই ধারণা যে, পার্শ্ববর্তী পাকিস্তান, বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসা অহিন্দু  অনুপ্রবেশকারীরা সবাই নাকি নিজেদের অভাব মিটাতে ভারতে আমাদের দেশে এসে থাকেন। যদি তাই সত্যি হয়, তাহলেও ভারতেই কেন? সেই ব্যক্তির ভারতে অবৈধ কর্মসংস্থান হওয়া মানে আমাদের দেশের একজন বৈধ নাগরিকের সে হিন্দু অহিন্দু যে ই হোক তার নায্য অধিকারে থাবা বসানো। সেই অনুপ্রবেশকারী বিদেশি ব্যক্তিরা যদি মুসলিম হোন, তাহলে তিনি পৃথিবীর যে কোন মুসলিম দেশে যান ভাগ্য ফেরাতে। তা না করে 'কাফের' এর দেশ ভারতেই কেন? ভারত পাকিস্তান ম্যাচ হলে, যে ভারতের সাহায্যে একদিন পাক খানসেনার হাত থেকে মুক্তি পেয়ে ভারত দ্বারাই স্বাধীন দেশের স্বীকৃতি মিলল, সেই ভারতেরই পরাজয় কামনা করা হয়, পাকিস্তানের সমর্থনে, তাহলে ভাগ্য ফেরানোর বেলায় ভারত কেন ফেভারিট, পাকিস্তান নয় কেন? বা স্বপ্নের সৌদি আরব নয় কেন? পৃথিবীতে ৫০ টির উপর মুসলিম রাষ্ট্র আছে, বিকল্পের তো অভাব নেই ।

আমাদের অনেক প্রিয় দেশবাসীরা তো এটাও জানেন না যে আমদের অতি প্রিয় 'নিরীহ' বাংলাদেশে কতগুলো এবং কি ধরণের জঙ্গি সংগঠনের অস্তিত্ব আছে, তাদের সঙ্গে ভারতের কোথায় গোপন সংযোগ, কেমন তাদের নেটওয়ার্ক, আর ভারতের রাজনীতির সাথেই বা তাদের কেমন আঁতাত, আর এইসব অপরাধীদের রাস্তা কুসুমিত করছে সীমান্তের ছেঁড়া কাঁটাতারের বেড়া!

আমি একজন ইমানদার ভারতীয় মুসলিম হিসাবে কি চাইব না, এই কাঁটাতারের বেড়া চিরতরে বন্ধ হোক?
নাকি যারা প্রতিবেশী দেশগুলি থেকে বিতাড়িত হয়ে ভারতে অবৈধ প্রবেশ করে আত্মরক্ষার পরেও ভারতেরই হিন্দুদের হত্যা করছে ভারতেরই অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক মদতে, তাদের সমর্থক হব, তাদেরকে ভারত সরকার দমন করতে গেলে তাদের পক্ষ নিয়ে সরকারের বিরোধীতা করব, সরকারকেই উল্টে হত্যাকারী বলে দেশে 'বিক্ষোভ' নামক দেশদ্রোহীতা চালাব, কেঁদে কেটে সাদাকে কালো বানিয়ে ফেসবুকে কালাদিবস পালন করার পোস্ট দেব?

নিশ্চয়ই না, তাই না?

অপরদিকে, যে সব হিন্দু শরণার্থী বিভিন্ন সময় শুধু হিন্দু হবার অপরাধে আমাদের প্রতিবেশী ইসলামিক দেশেগুলি থেকে অত্যাচারিত বিতাড়িত হয়ে আমাদের দেশে প্রাণের তাগিদে এসেছেন, তারা ভারতবর্ষে যদি স্থান না পান তাহলে তারা কোথায় যাবেন? পৃথিবীর সব এমনকি ভারতীয় মুসলিমদের কাছেও স্বর্গ হলো আরব। আর তাঁদের বর্তমান প্রজন্মের অনেকেরই অজানা যে, তাঁদের জন্নত আরব একদিন ভারতেরই অংশ ছিল, এবং সেখানকার মানুষরা ছিলেন সনাতনধর্মী। এটা কোন কল্পকাহিনী নয়, পৃথিবীর বুক থেকে ইসলামিক আগ্রাসনের ফলে হিন্দুদের ক্ষয়ে যাবার, সংখ্যায় কমে যাবার, নিজ ভিটে জমি থেকে বিতাড়িত হবার যন্ত্রণাময় ইতিহাস, যার ধারা আজো অব্যাহত।
তাই, বর্তমান ভারতবর্ষই পৃথিবীর নির্যাতিত, জোর করে নিজের ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ হওয়া হিন্দুদের একমাত্র এবং শেষ আশ্রয়। তাঁদের ত আর ৫২ টি বিকল্প দেশ নেই, আশ্রয় নেবার মতন। পৃথিবীতে হিন্দু দেশ যে মাত্র একটাই, বর্তমানের ভারত।

এই শরণার্থী হিন্দুদের যাতে কুকুর বিড়ালের মত নয়, মানুষের মত বাঁচার অধিকার পান, তাঁদের জন্যে ও আগেই বলেছি বৌদ্ধ ,জৈন আদি যারা পাসপোর্টে ভারতে এসে ফিরেও যান নি অথচ নাগরিকের  পরিচয় ছাড়াই এদেশে আছেন তাঁদের ভারতের নাগরিক অধিকার দেবার জন্যে এই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন।
এতে ভারতের বৈধ মুসলিম নাগরিকদের ক্ষতি হবে এই ভুল কথাটা সাধারণ মানুষদের বুঝিয়ে নিজেদের স্বার্থে, আর যারা এই ভুলটাকেই ঠিক ধরে নিয়ে দেশ মাথায় করছেন, সত্যিই তাদের বিচার বুদ্ধির দৌড় দেখে করুণা হয়।

ভারতের মুসলিমরা যদি পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় সবচেয়ে বেশী সুখী হয়ে থাকেন, তাহলে এটাও ঠিক পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারতের   মুসলিম নাগরিকরা অনেক বেশী উদার, সচেতন এবং দেশপ্রেমিক। তাঁদের কাছে উন্মাদ ধর্মান্ধতা থেকে দেশ অনেক বড়। তাই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের মাধ্যমে যদি নিজের দেশে এই সর্বনাশা অবৈধ  অনুপ্রবেশ রোধ করতে সহায়ক হয়, তাঁদের ত এই আইনের বিরোধ নয়, বরং ১০০% সমর্থন দেওয়া উচিত এবং অনেক প্রকৃত শিক্ষিত মস্তিষ্কের মুসলিমরা সমর্থন দিচ্ছেন ও।

কিন্তু, দূর্ভাগ্য যে, বিভিন্ন মুসলিম সংগঠন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সত্যিটা জেনেও  নিজেদের কদর্য স্বার্থে এই দেশ হিতকর আইনের বিরোধীতা করে আন্দোলনের নামে সরাসরি দেশদ্রোহীতার চক্রান্ত চালাচ্ছেন।
আসলে তারা ঠিক কি চাইছেন?

অসহায় হিন্দু শরণার্থীদের ভারতের নাগরিকত্ব না দেওয়া? নিজ দেশের সাম্প্রদায়িক হিংসার শিকার এই নিরপরাধ হিন্দুরা তাহলে নিপাত যাক? তাদেরকে নাগরিকত্ব দিলে ভারতীয় মুসলমান নাগরিকদের কোথায় কিভাবে ক্ষতি? না কি সরকারী খাতায় পত্রে কিছু অসহায় হিন্দুর নাম উঠে যাবে, সেই জ্বালায় জ্বলছেন তারা?

তাদেরকে মনের দ্বিতীয় গোপন ইচ্ছেটা কি? অসহায় সহায় সম্বলহীন হিন্দুদের সাথে বা তাদের বদলে অহিন্দু অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের যারা ভারতে ঢুকে হিন্দুদের হত্যা করে, ভারতের বুকে ক্যনসারের মত ছড়িয়ে পড়ছে তাদেরকেই  ভারতের নাগরিকত্ব দিয়ে দেওয়া আর সীমান্ত খুলে আহ্বান জানানো?

শরণার্থী আর অনুপ্রবেশকারীদের ভারতে আসার কারণ ও উদ্দ্যেশ কি এক?

এই আইনের ফলে ভারত হিন্দুরাষ্ট্র ঘোষিত হতে চলেছে বলে দেশে তাঁরা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ঘটাতে বদ্ধপরিকর। তাহলে কি আসলে হিন্দুরাষ্ট্রের ভয় নয়, বরং ভারতকে মুসলিমরাষ্ট্রের পরিণত করার "গজবা এ হিন্দ" স্বপ্নটা অপুরণ হবার আশঙ্কা!??

কেউ বলছে হিন্দুদের থেকে আজাদী চাই। যারা বলছে তারা নিজেরা ই সবচেয়ে ভাল জানে একজন মুসলমান ভারতে যতটুকু আজাদ ততটুকু পৃথিবীর আর কোথাও নয়, কোন মুসলিম দেশেও নয়। হিম্মত কোন মুসলিম দেশে দাড়িয়ে কোন হিন্দু এইভাবে আজাদীর স্লোগান দিক্! কোতলে আম হয়ে যাবে। নীরব থেকেই হচ্ছে। আজাদী চাও, বেশ তো, আজাদ হয়ে চলে যাও পঞ্চাশটি মুসলিম দেশের যে কোন একটায়। তা নয়, 'আজাদী' চাই এদেশে থেকেই!কিভাবে? হিন্দুদের দেশেই "Fuck Hindutwa" বলে না 'গজওয়া এ হিন্দ' করে? আর তারই সরব নীরব সমর্থক প্রদীপের সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু সেলিম, আরিফ, কামাল বা পূজার বেস্ট ফ্রেন্ড আয়েশা, শামিমা, আনোয়ারা রা!!?? হায়রে বন্ধুরা সারাজীবনের দেওয়া ভালবাসা তোমাদের হৃদয়ে তাহলে কোনদিনও রেখাপাত করতে পারেনি? ভারত তোমাদের কি দেয়নি! সমান অধিকার সম সুখ সম সম্মান, তবুও ভারতের পবিত্র মাটিতে জন্মেও নিজেকে সর্বাগ্রে ভারতীয় নয় মুসলমান ভাবছো?

আর যে সাধারণ মুসলিম জনগণ এই সংগঠন বা রাজনৈতিক উষ্কানীতে পো ধরেছেন তারা কি একবারও এই নগ্ন সত্যিগুলোকে বোঝার চেষ্টা করবেন না নাকি ইচ্ছেকৃতভাবেই না বোঝার ভান করছেন? তারাও কি হিন্দু শরণার্থীরা ভারতেও ঠাই না   পেয়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাক আর ভারতে অহিন্দু অবৈধ অনুপ্রবেশ বজায় থাকুক? আর তাহলেই বুঝি ভারতীয় মুসলমানদের নাগরিকত্ব সুরক্ষিত হবে?
আশ্চর্য অন্ধ অশিক্ষিত চিন্তাধারা!

ভারতের শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মুসলমান নাগরিকরাও কি তাহলে ভারতকে মুসলিম রাষ্ট্র হিসাবেই দেখতে চাইছেন? সত্যি কথা সদাই অপ্রিয়। কিন্ত, এসবই একেবারে তলিয়ে বোঝার, বিবেচনার এবং মানবিকতার বিষয়।

আর তারা যদি তা না চান, তাহলে কিসের ভিত্তিতে তারা CAA এর বিরোধ করছেন?
এটি হিন্দু-মুসলিমের বিষয়ই নয়, যার সাথে সেটাকে কিনা "আজাদী(!)" পর্যন্ত টেনে নেওয়া হচ্ছে! নোংরা রাজনীতি আর মূর্খামির একটা সীমা থাকে!

আমি যখন একজন হিন্দু নেতা বা নেত্রী, তখন কেন CAA এর বিরোধীতা করছি? আমি সেকুলার বলে? নাকি যেখানে আমার ভোটার সংখ্যাই 60 হাজার সেখানে নব্বই হাজার ভোটের জাদুটা এবার থেকে আর চলবে না বলে? ভোটের দিন "না জানে কাহা সে আতে হ্যাঁয়, না জানে কাহাকো যাতে হ্যাঁয়, এই ভুইফোড় ভোটার।

ক্রমশঃ

Sunday, 2 June 2019

তিন তালাক বিল, মোদী সরকার এবং প্রাসঙ্গিক কিছু কথা

  একটা কথা যেটা সবচেয়ে জরুরী সেটা হলো যে মোদীজী মুসলিম মেয়েদের তিন তালাক নামক ভয়ানক দূর্গতি বন্ধ করার যুদ্ধেে নেমেছেন।

  'হালালা'র দোহাই দিয়ে নিরীহ মেয়েদের একপ্রকার হালাল করার যে কদর্য্য রীতি সেই নরকযন্ত্রনা থেকে মুসলিম মা বোন মেয়েদের মুক্তি দিতে গিয়ে মোদীজীকে বারবার কখনও মুসলিম মৌলবাদীদের কখনও বিরোধী দলের প্রবল আক্রোশের মুখে পড়তে হচ্ছে। এটা কোন নারীবাদ বা ধর্মবাদের নিরিখে দেখবার বিষয়ই নয়, এটি সম্পূর্ণরূপে মানবাধিকারের বিষয়। সব লিঙ্গের প্রতি সম ন্যায়(Gender Justice) নিশ্চিত করার বিষয়।

  এতদিন মুসলিম সমাজে স্বামীরা মৌখিকভাবে তিনবার 'তালাক' বলে দিলেই এমনকি চিঠি, SMS,  বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম যেমন হোয়াটস্অ্যাপ, ফেসবুক এর মাধ্যমেই তালাক দিয়ে দেওয়া যেত এবং মুসলিম সমাজের মৌলবীরা সেটাকে বৈধ বলেই  স্বীকৃতি দিয়ে আসছিলেন।

  শুধু এক মুহুর্তে বলা তিনটি শব্দে এদ্দিন যাবৎ মধ্যযুগীয় প্রথায় একটি মুসলিম নারীর ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে যেত।

  যাই হোক, মোদীজীর প্রচেষ্টায় ২০১৭ এর ২২শে অগাস্ট এক ঐতিহাসিক রায়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট তিন তালাক বা 'Talaq-e-Biddat'(instant divorce অর্থাৎ তাৎক্ষণিক তালাক) কে বেআইনি ও অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করে।

  আর ঠিক এখানেই দেশের তথাকথিত বিরোধী দলগুলো এবং মুসলমান সমাজের মুরূব্বিদের তীব্র বিরোধ শুরু হয়ে গেলো। সেই বিষয়ে বিস্তারিত বিবরণ না দিলেও একটা কথা বিশেষ উল্লেখযোগ্য তা হল, বিলটি পাস হয়ে যাবার আগমুহূর্তে পাকা ধানে মই দিতে বাদ সাধল অল ইন্ডিয়া মুসলিম পারসোনাল ল' বোর্ড (All India Muslim Personal Law Board)।

  ভাগ্যের কি নিষ্ঠুর পরিহাস! যেখানে মুসলিম মাতব্বরদের নিজেদের সমাজের মেয়েদের পক্ষে কল্যাণকর এই বিলের সমর্থন করার কথা তারা কিনা উল্টে এই তিন তালাক বিরোধী বিলটিকেই বলে বসলেন 'নারীবিরোধী'? এই কু-প্রথাটি মানবতা ও সংবিধান-বিরোধী হওয়া সত্ত্বেও তাঁরা সেটাকে ইসলাম বিরোধী ও শরীয়া আইন বিরোধী বলে মোদীজীর এই শুভ প্রয়াসের প্রবল বিরোধ করতে থাকলেন।

  কিন্তু এ ব্যাপারে আইন প্রণয়নের ভার সুপ্রিম কোর্ট থেকে ছেড়ে দেওয়া  হয়েছিল সরকারেরই ওপর।

এই প্রথাকে শাস্তিযোগ্য করে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ২০১৭ এর ২৮শে ডিসেম্বর তারিখে  'দ্য মুসলিম উইমেন প্রোটেকশন অব রাইটস ইন ম্যারেজ অ্যাক্ট' নামে একটি বিলও আনে, যা সাধারণভাবে 'তিন তালাক বিল' নামেই পরিচিতি পায়।

  মোদীজীর সুস্থ ও দৃঢ়চেতা সংকল্পের ফলে বিলটি অবশেষে জোরদার সম্মতিক্রমে লোকসভায়পাশ হয়। কিন্তু, রাজ্যসভা তে বিলটি নিয়ে বিরোধী দলগুলোর বিরোধ চলতে থাকে। অবশেষে একটি অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে বিলটিকে বলবৎ করা হয়।

  এই বিল অনুযায়ী স্ত্রীকে তিন তালাক দিলে স্ত্রী স্বয়ং বা উনার নিকট আত্মীয়রা সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে পারবেন এবং অভিযুক্ত ব্যক্তি স্ত্রীকে খরপোশ দিতে বাধ্য হবেন এবং উক্ত ব্যক্তির শাস্তি হবে আর্থিক জরিমানা সহ তিন বছরের হাজতবাস।

  কিন্তু, লড়াইটা এখানেই শেষ নয় বরং আসল লড়াই এখনো বাকী।

  যে বিরোধী দলের শীর্ষ নেতৃত্বরা এই  বিলের বিরোধী তাদের মানসিকতাটা একবার খতিয়ে দেখার দরকার।
তাঁরা কেন এই প্রথার কুফলগুলোকে দেখেও না দেখার ভান করছেন এবং এটা নিয়ে মোদীজী রাজনৈতিক লাভ উঠাতে চান এই কদর্য্য মিথ্যাটাকে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন?

  মোদীজী ত বারবার এমন ধরনের সিদ্ধান্তই নিয়ে থাকেন যেসবের ফলে ভোট বাড়া নয় বরং কমার আশঙ্কাই বেশী থাকে, সে তিন তালাকের বিরোধই হোক বা নোটবন্দী।

  স্বাধীনতার পর থেকে  আজ অব্দী কোনো প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা হয় নি নিজের গদীর ঝুঁকি নিয়ে এরকম দেশহিতকর বা জনকল্যাণকর সিদ্ধান্ত নিতে।

  সবচেয়ে দূর্ভাগ্যের বিষয় হল এই বিলের বিরোধীতায় সবচেয়ে বেশী  সোচ্চার বিরোধী দলের বিশেষ করে করে কংগ্রেসের শীর্ষ নেত্রীরা।
সোনিয়া গান্ধী থেকে শুরু করে খোদ কংগ্রেসের মহিলা কমিটির অধ্যক্ষাও প্রকাশ্য সভায় এই ঘোষণা করেন যে তাঁরা ক্ষমতায় এলে তিন তালাক বিরোধী বিলকে নির্মূল করে দেবেন!!

https://khabar.ndtv.com/news/india/congress-on-triple-talaq-bill-sushmita-dev-rahul-gandhi-bjp-govt-1989929

  এই বিলের বিরোধীতা করা মহিলা নেত্রীদের কাছে আমার একটাই প্রশ্ন, দেশকে ঠিক কোনদিকে নিয়ে যেতে চান আপনারা এবং কি করে নিজেরা মহিলা হয়েও মাত্র তিনটি শব্দে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মহিলাদের জীবনের খোলামকুচি হওয়াটাকে সমর্থন করতে পারেন যেখানে এই তিন তালাক শুধু তালাকপ্রাপ্ত মহিলাদেরকেই নয় তাদেরকে সন্তানদের জীবন ও ভবিষ্যতকেও কু-প্রভাবগ্রস্ত করে তোলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই? আপনারা জননেত্রী। আপনাদের কথা মানুষ শোনে, বিশ্বাস করে। কোথায় আপনারা তাদেরকে সচেতন করে তুলবেন, তা না করে শুধু নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থে তাদেরকে আরো অন্ধকারে নিক্ষেপ করছেন?

  এই বুঝি আপনাদের বিবেকবোধ, সংখ্যালঘুদের প্রতি দায়িত্ববোধ আর ভালোবাসা???

  ৭২ বছরে কংগ্রেস ভারতে মুসলিম তোষণ করেছে ঠিকই, কিন্তু কোন মুসলিমদের? যারা অন্যায়, আতঙ্কবাদকে সমর্থন করে, অন্ধ ধর্মোন্মত্ততার বশে নিজের সমাজেরই গরীব ও মেয়েদেরকে শোষণ করে আর তারাই আবার মুসলিম সমাজের মাথা হয়ে সাধারণ সরল ধর্মভীরু মুসলিমদেরকে ভয় দেখিয়ে  নিজেদের স্বার্থ ও ইচ্ছেমত নিয়ন্ত্রণ করে আসছে এতযুগ ধরে।

  আর সাধারণ মধ্যবিত্ত বা নিম্নবিত্তরাই সব সমাজের বৃহত্তম অংশ। তাদেরকে কখনও ভুল বুঝিয়ে কখনও ধমকে ধামকে কংগ্রেস বা ওই ধরনের সর্বনাশা সমাজ দেশ জাতিকে পিছিয়ে রাখা দলগুলিকেই ভোট দিতে এযাবৎ শিক্ষা দিয়ে এসেছে মুসলিম সমাজের তথাকথিত মুরুব্বিরা এবং সেই দলগুলো ক্ষমতায় এলে কাদের কতটুকু উন্নতি ও সুবিধা হয়েছে সেই  গোপন সত্যিটা যেমন সর্বজনবিদীত তেমনি সাধারণ মুসলিম সমাজের উন্নয়নের শকট যে এখনো প্রস্তরযুগেই দাঁড়িয়ে আছে তাতেও কোন সন্দেহ নেই।

  কংগ্রেস সহ ভারতের বাকী বিরোধী দলগুলো কি এই সাধারণ মুসলিম জনসাধারণের কথা সত্যিকার অর্থে আদৌ কখনো ভেবেছে? ভাবেনি। কেবলমাত্র ভোট ব্যঙ্ক হিসাবেই ব্যবহার করে গেছে।

  আজ মুসলিম মহিলারা মার খেয়েও মোদীজীকে ভোট দিয়েছেন। শুধু মুসলিমরা নন সাধারণ হিন্দুরাও নারীপুরুষ নির্বিশেষে বিরোধী দলের গুন্ডাদের হাতে নির্যাতিত হবার পরেও অনেক ক্ষেত্রে প্রাণসংশয় এর ভয়কে তুচ্ছ করেও বিজেপীকেই ভোট দিয়ে মোদীজীকে ফিরিয়ে এনেছেন। এটাই সত্যিকারের গণতন্ত্র। মানুষকে ভালবেসে মানুষের জন্যে তিনি কাজ করেছেন। মানুষ সেই ভালোবাসাই তাঁকে ফিরিয়ে দিয়েছেন।

"রাজা সবারে দেন মান...
সে মান আপনি ফিরে পান।"

  কারণ, মানুষ আজ বুঝতে শিখেছে এতো বছর তারা কি থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছিল আর কি তাদের প্রাপ্য। মোদীজী দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী যিনি নিজে আমাদের চোখ খুলে দিয়েছেন। যে সব কাজ করলে ভোট পাবার সম্ভাবনা কমে যেতে পারে জেনেও দেশ ও মানুষের জন্যে নিরলস ও নিঃস্বার্থভাবে সেই কাজগুলোই করে যাচ্ছেন এবং আশ্চর্যজনকভাবে আপামর জনসাধারণ উনার সেই সিদ্ধান্তগুলোকে একটু কষ্ট হলেও মেনে নিচ্ছে এবং তার সুফলও পেয়ে চলেছে।

  কিন্তু, একমাত্র যারা ক্ষমতালোভী ও স্বার্থপর তারাই চায় না দেশ এগোক। তারাই কখনো ধর্মের দোহাই দিয়ে কখনো আরও হাজার একটা মিথ্যা অছিলায় মোদী সরকারের নিরন্তর বিরোধীতা করে চলেছে। দেশের উচ্চবিত্ত থেকে নিম্নবিত্ত কেউ কিন্তু সরকারবিরোধী নয়, কারণ তারা এই সরকার যে মঙ্গলকামী সেটা বুঝে গেছে।

  আর ঠিক সেজন্যেই বিরোধীদের ভয়। মানুষ তাদের স্বরূপটাকে চিনে ফেলায় তাদের পাপের রাজত্বের শেষ ঘনিয়ে এসেছে দেখে তারা মরিয়া হয়ে সরকারের সমস্ত সুস্থ সঠিক সিদ্ধান্ত ও কাজের বিরোধ ও ভুল বিশ্লেষণ করে সাধারণ মানুষকে ভুল পথে টেনে নিয়ে যেতে চাইছে শুধু এবং শুধু নিজেদের নিকৃষ্ট স্বার্থে।
সরকারের কাজে যদি ভুল কিছু থাকে তাহলে ভুল ধরিয়ে দেওয়া বিরোধী দলের অবশ্যই কর্তব্য। কিন্তু শুধু  বিরোধ করার জন্যে উন্মত্ত হয়ে বিরোধ করা তাতে দেশের বা মানুষের সর্বনাশ হলে হৌক শুধু আমার স্বার্থটা বাঁচলেই হল, এটা কোন মানসিকতার পরিচয়?
শুধু  নিজেরা সহ্য করতে পারছেন না বলে সাধারণ মানুষের মনেও সরকারের বিরুদ্ধে ঘৃণা আর সন্দেহ ঢুকিয়ে বিপথগামী করতে চাইছেন?

  এবার লোকসভার প্রথম দফার ভোটে কোনও এক বিরোধী দলের সমর্থক ভোটার ভোট দিতে গিয়ে ভুল করে ই ভি এম এ বিজেপীর বোতাম টিপে দেয় এবং তাতে এত রাগ হয় নিজের প্রতি সে তৎক্ষণাৎ নিজের আঙ্গুল নিজেই কেটে ফেলে। কি আক্রোশ! এটাই ত অসহিষ্ণুতা! আর এই অন্ধ আক্রোশের বীজ কারা পুঁতে দিচ্ছে সহজে সরল জনসাধারণের মনে, কেবলি নিজের স্বার্থে? তাঁরা এমনভাবে সাধারণ মানুষদের মগজ ধোলাই করছেন যে তারা মোদী সরকারকে ঘৃণা করতে গিয়ে নিজের হাতে নিজের আঙ্গুল কাটতেও রাজী?

  যে ছেলেটা বালাকোটে সার্জিকেল স্ট্রাইকের পরে খুব খুশী হয়ে বলে যে, আজ পাকিস্তান ক্রিকেটে ভারতের কাছে হারলে যে আনন্দ হয় সেই আনন্দ হচ্ছে, সে ই কিনা রাত পেরোতে না পেরোতে মুখ কালো করে প্রশ্ন করে, "স্ট্রাইক ত হয়েছে বুঝলাম, কিন্তু, আতঙ্কবাদীদের লাশ কোথায়?"

   বিষাক্ত বুদ্ধির ক্যানসারের জীবাণু বিরোধী নেতা নেত্রীরা কি পরিকল্পিত সুকৌশলে মানুষের মাথায় ঢুকিয়ে দিচ্ছেন যে আক্রান্তরা বুঝতেও পারছে না তারা আক্রান্ত হচ্ছে! বরং তারা ত নিজেদেরকে চোখ খোলা বুদ্ধিজীবী ভাবছে আর যাঁরা চোখ খোলাচ্ছেন, তাঁদেরকে ভগবান!

  তাঁদের অনেক সৌভাগ্য যে তাঁরা ভারতবর্ষের মত দেশের জননেতা বা নেত্রী। মানুষ তাঁদের কথায় প্রভাবিত হয় বলে সুযোগ নেবেন? সুযোগ অবশ্যই নিন কিন্তু সেটা মানুষের মঙ্গলার্থে, সত্যির উপর মিথ্যার পর্দা দিয়ে মানুষকে অন্ধকারে ঠেলে দিতে নয়।
তাঁরা শুধু চেয়ারটা বাঁচাতে এতটাই উদ্গ্রীব হয়ে উঠেছেন যে, এটা ভুলে যাচ্ছেন যে, চেয়ারটা যে ঘরটার আশ্রয়ে আছে সেই ঘরটাই যদি ভেঙ্গে যায় তবে চেয়ারটার অস্ত্বিত্বই থাকবে না।
এইটুকু দূরদৃষ্টিটা ত রাখুন অন্ততঃ।

  আমাদের দেশে এবার লোকসভা নির্বাচন শুরু হবার প্রাক্কালে TMC দলের প্রার্থী নুসরত কে ABP আনন্দ চ্যানেলের একটি সাক্ষাৎকারে জিজ্ঞেস করা হয়,  মোদীজী যে তিন তালাক এর বিরুদ্ধে আইন করেছেন সে সেটাকে সমর্থন করে কিনা।
এবং মেয়েটি বিরোধী দলের প্রার্থী হওয়া সত্ত্বেও এক কথায় উত্তর দিল, "সমর্থন করি"। আমার ভীষণ ভীষণ আনন্দ হচ্ছিল শুনে। সে মোদীজীকে সমর্থন করেছে বলে নয়, একজন মানুষ এবং মেয়ে হিসাবে ন্যায়কে সমর্থন করছিল বলে। এটাই ত সুস্থ রাজনীতি। তাই না?

  কিন্তু, এটা বলার পর থেকেই যেখান থেকে সে প্রার্থী  ছিল সেই  বসিরহাটের মৌলবাদীরা তাকে এই বলে ধমকাতে শুরু করল যে সে নিজে মুসলিম হয়ে ইসলামধর্মের অপমান করছে, সে যেন তার 'ভুল(!!)' সংশোধন করে ইত্যাদি ইত্যাদি।
এবং যেহেতু এই মৌলবাদীরা ও TMC নেত্রী একে অপরের পরিপূরক তাই তাদের মন রাখতে দিদি নুসরতকে হাতধরা অবস্থায় এক জনসভার মঞ্চ থেকে নিজেই নুসরতের হয়ে ঘোষণা করে দিলেন যে সে ভবিষ্যতে এই ধর্মীয় দিকগুলি খেয়াল রেখে চলবে।
সেই মুহূর্তে নূসরতের কি মনে হচ্ছিল আমি জানিনা। কিন্তু খুব দুঃখ হচ্ছিল এটা ভেবে যে মেয়েটার মধ্যেকার সততার আগুনের স্ফূলিঙ্গটা জ্বলে ওঠার আগেই নিভিয়ে দেওয়া হল। ওর মধ্যে  হয়তো বাংলার হাজারটা মুসলিম মেয়েকে আলোতে টেনে আনার সম্ভাবনা ছিল, কিন্তু আজ মানুষের উপর দল এটা বুঝতে শিখে নিয়ে নিজের বিবেকের সাথেই সমঝোতা করে নিল। (এই ঘটনাগুলোর ভিডিও সামাজিক মাধ্যমেও উপলব্ধ।)

  ওর দল ত জনদরদী মুসলিমদরদী। তারা ত যে গরু দুধ দেয় তার লাথ খেতে ও রাজী। তাহলে মোদীজীর যে তিন তালাক বিরোধী পদক্ষেপ যেখানে মুসলিম মেয়েদের জন্যে আশীর্বাদস্বরূপ সেটারই কেন বিরোধীতা করে বসল? শুধুই মোদীজীর বিরোধ করতে হবে বলে? তা হলে তারা কি সত্যিই মুসলিমদরদী বা মানবদরদী অন্ততপক্ষে?

  এই কি গণতন্ত্র? এটাই কি  সুস্থ রাজনীতি?
মাথায় কাপড় দিয়ে কোরান পড়ে আর তলে তলে তাদেরই সর্বনাশ করছে যারা তারা কি না মোদীজীর দিকেই আঙ্গুল তোলে? যে মানুষটি একটিও মুসলিম ভোট ও না পেতে পারেন জেনেও  তিন তালাকের মত সামাজিক কু-প্রথা ও মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন তিনি নাকি ধর্মের ভিত্তিতে দেশভাগ করছেন?

ছিঃ! লজ্জা লজ্জা !!

  ভোটের জন্যে দুষ্ট মুসলিম তোষণ অনেক হয়েছে। আমাদের দেশের মূলস্রোতের প্রকৃত যে মুসলিম সমাজ যারা আমাদের দেশের সম অধিকারের অংশীদার মোদী সরকার এবার তাদের জন্যে কাজ করছে।
যারা মোদীজীকে হিংসা করছে সেই ফণা ভেঙ্গে ছাতু হয়ে যাওয়া আধমরা সাপেরা এবং আরেকদল যাদের তালাকপ্রাপ্ত মেয়েদের উপর ধর্মের দোহাই দিয়ে লালসা চরিতার্থ করার সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে দেখে গায়ে ফোস্কা পড়ছে একমাত্র তারাই বলবে মোদী মুসলিমবিরোধী এবং সাধারণ মানুষদের দিকভ্রান্ত ও করতে চাইবে।

  কিন্তু মুসলিমরাও বোকা নন। কোনটা নাটক আর কে প্রকৃত হিতৈষী তারা ঠিকই বোঝেন। যারা এখনো বোঝেন নি আগামীতে তারাও বুঝবেন। মোদীজীর কাজে পরিচয়।

  আর শুধু হিন্দু, মুসলিম দিয়ে নয়, মোদীজীর সরকার জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার উন্নতিকল্পে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

  মোদীজীর মন্ত্রই হল 'সবকা সাথ- সবকা বিকাশ', সবাইকে নিয়ে সবার উন্নতি করাই যার একমাত্র লক্ষ্য।
আর সবকা সাথ সবকা বিকাশ করে চলেছেন বলেই সবার বিশ্বাস ও তিনি অর্জন করতে পেরেছেন।

  তাই তাঁর নূতন শ্লোগান
"সবকা সাথ- সবকা বিকাশ-সবকা বিশ্বাস"

  আর তাই ২৩শে মে মোদীজীর ঐতিহাসিক বিজয়ের পর ভারতবর্ষের মুসলিমরা আনন্দে মসজিদে মসজিদে ও বিভিন্ন জায়গায় একে অপরের মিষ্টিমুখ করান।

https://www-siasat-com.cdn.ampproject.org/v/s/www.siasat.com/news/muslims-celebrate-modis-victory-muslim-dominated-peeli-kothi-1500157/amp/?amp_js_v=a2&amp_gsa=1&usqp=mq331AQA&fbclid=IwAR3hC4TGjq2IIVA1C-i3WNlRrDaObJ8FAyHAYPmTeDUDzhiibsIwgf_NfB4#referrer=https%3A%2F%2Fwww.google.com&amp_tf=From%20%251%24s&ampshare=https%3A%2F%2Fwww.siasat.com%2Fnews%2Fmuslims-celebrate-modis-victory-muslim-dominated-peeli-kothi-1500157%2F

  মোদীজীর ডাকে কালঘুম ভেঙ্গে এটা আমাদের নতুন ভারতবর্ষ।

রবীন্দ্রনাথ ও আমাদের।
নজরুল ও আমাদের।
শরৎচন্দ্র ও আমাদের
প্রেমচন্দ ও আমাদের।

  জাতিভেদের রাজনীতির দিন এবার শেষ।
ভারতবর্ষের প্রতিটি প্রান্তের মানুষ জাতি ধর্ম ভাষা নির্বিশেষে একে অপরের আত্মার আত্মীয়।
মোদীজী ভারতবর্ষের এই চিরন্তন অখণ্ডতাকে ধরেই এগোচ্ছেন। ভারতমাতার আশীর্বাদ তাই তাঁর উপরেই বর্ষিত হচ্ছে মানুষের মাধ্যমে।

  আমরা গর্বিত আমরা ভারতবাসী।
আমরা গর্বিত মোদীজী আমাদের প্রধানমন্ত্রী।
তাই সাধারণ মানুষ ভয়ে নয় ভালোবাসায়, দূর্মুখ নিন্দুকদের দেশদ্রোহীদের প্রলাপ বকা মুখে ছাই দিয়ে উনাকে দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রীরূপে ফিরিয়ে এনেছে।

  আমরা আশাবাদী উনার হাত ধরে সবার জন্যে সবকিছু ভালো হচ্ছে আর হবে।
"ভারত আবার জগৎ সভায় শ্রেষ্ঠ আসন লবে"।

  আর যেতে যেতে একটাই অনুরোধ সকল মোদীবিরোধী দলের নেতৃত্বদের প্রতি, বিরোধের জন্যে বিরোধ অনেক ত হল। একবার না হয় নাকারাত্মক দৃষ্টিভঙ্গির বাইরে বেরিয়ে এসে আপনারাও সাকারাত্মক মনোভাব নিয়ে নুতন ভারত গড়ার যজ্ঞে সরকারের পাশে থাকুন। ভবিষ্যতে বরং এ নিয়ে গর্ববোধই করতে পারবেন। আর তা করতে যদি একান্তই অক্ষম হন তাহলে অন্ততঃ অশান্তিটা থামান। অযথা উৎপাতে আমরা সত্যিই ক্লান্ত। অনেক হয়েছে। এবার সাধারণ মানুষদেরকে স্বাভাবিক জীবনের ছন্দে ফিরতে দিন। আর সরকারকে নিশ্চিতমনে দেশের কাজ করতে দিন।
নিজেরা শান্তিতে থাকুন। অন্যদেরও থাকতে দিন।

জয় হিন্দ
বন্দে মাতরম।
🇮🇳