Friday, 31 January 2020

নাগরিকত্ব সংশোধন আইন CAA এবং ভারতবর্ষ ও আসাম: কিছু অপেশাদারী কথা

পর্ব-১
(CAA ও দেশ)

নাটক, প্রহসন, প্রতারণা, উগ্র সাম্প্রদায়িক এবং আঞ্চলিক বিদ্বেষ আর হিংসা, সর্বোপরি ভোট বাক্সের রাজনীতি যাদের প্রতিবাদের হাতিয়ার সেই বৌদ্ধিক দেউলিয়াদের প্রতি ঘৃণা নয় করুণা বোধ হয়।

একটা কথা কিছুতেই বোঝা যাচ্ছে না যে, বিপন্ন কাউকে আশ্রয় দেবার মানেই কি স্থায়ী বাসিন্দাকে উৎখাত করা ? জাতি ধর্ম নির্বিশেষে আমরা যারা নিশ্চিত জানি যে আমরা সত্যিকার অর্থেই ভারতবর্ষের বৈধ নাগরিক তাদের মাথাব্যথার কারণটা কোথায় ?

তবে একটা কথা সত্যি যে, ভারতবর্ষের জনসাধারণের সহজ মন আর মাথাকে প্রভাবিত বা বিভ্রান্ত করতে রাজনীতির জুড়ি মেলা ভার আর তার সঙ্গে জাত ধর্ম আঞ্চলিকতার ধুনো থাকলে তো জনদরদী জননেতাগণের কেল্লা ফতে! কারণ, তারা খুব ভালোভাবেই অবগত যে, তাদের মুখে বলা একটা কথাই তাদের অনুগামীদের ভড়কে দিতে যথেষ্ট । কিন্তু, তাই বলে সত্যিই কি আমরা নিজেদের নূন্যতম কান্ডজ্ঞান আর বিচারবুদ্ধিকেও জলাঞ্জলি দিয়ে দেব?

দেশভক্তি আর 'আমার দেশ' মার্কা সংলাপের মেকী দেখনদারির বাইরে বেরিয়ে বাস্তবিকতাটাকে বোঝার দায় বা না বুঝতে চাওয়ার কুপরিণাম কিন্তু আমাদেরকেই ভোগ করতে হবে বা হয়।

সম্প্রতি নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে দে়শে 'প্রতিবাদের' যে উন্মত্ত প্রদর্শন শুরু হয়েছে, তার নেপথ্যের কারণটা কি আমরা আদৌ সঠিকভাবে জানি? উক্ত বিলটিকে সংবিধান বিরোধী এবং দেশের সংখ্যালঘু অর্থাৎ কিনা মুসলিম সম্প্রদায়(যদিও ভারতবর্ষে মুসলিমরা কখনোই সংখ্যালঘু নন বরং দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনসংখ্যা)বিরোধী বলে সাধারণ মানুষকে পরিকল্পনামাফিক উস্কে দেবার কারণ বহুবিধ ও তার ভিত্তিও রাজ্যভেদে আলাদা।
  আমরা সেই জটিলতার বিশ্লেষণে না গিয়ে বরং সুস্থ সহজভাবে বিষয়টা বোঝার চেষ্টা করি।

CAB(Citizenship Amendment Bill) 2019 যা বর্তমানে CAA(Citizen Amandment Act) হিসাবে  বলবৎ হয়ে গেছে  তাতে কোথাও এমন কোন clause বা শর্তের  উল্লেখ নেই যা থেকে মনে করে নেওয়া যেতে পারে যে, বিলটি সংবিধান বিরোধী বা ভারতের মুসলিম জনসাধারণের  নাগরিক অধিকার ধ্বংসকারী। খুব বেশী বিস্তারিত তথ্য আলোচনা না করে সহজ সত্যগুলো বুঝতে  পারলে হয়তো এই অন্ধ সংশয় ও নিরাপত্তাহীনতার  যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে পারি কিছুটা হলেও।

(১) যে অপ্রিয় সত্যিটাকে আমরা স্বাধীনতার সময় থেকে জেনেও না জানার না বলার ভান করে এসেছি সেটাকে মেনে নিয়ে তার নিরিখে ও দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিচার করলে দে়খতে পারি হিন্দুস্থানের হিন্দুরা নিজেদের স্বার্থে কোনদিনই তৎপর হয়নি, এমনকি ভারতবর্ষের স্বাধীনতাটাই এসেছিল জিন্নার 'Two Nations Theory' র উপর ভিত্তি করে, যেখানে ভারত দ্বিখণ্ডিত হয়েছিল অখন্ড ভারতকেই খুবলে নিয়ে পাকিস্তানকে পৃথক মুসলিম রাষ্ট্র তৈরী করে। পাকিস্তানের তথাকথিত 'কায়দে আজম' মহম্মদ আলি জিন্নার আবদার রাখতে। অবশ্য মোতী গাজীর সুপুত্র জনাব নেহরুরও বাদশা হবার খোয়াইশ ছিল বৈকি। অগত্যা স্নেহান্ধ বাপু দু়ই ছেলেকেই খুশী করতে গি়য়ে হিন্দু মুসলিম নির্বিশেষে কোটী কোটী ভারতীয়দের মা কেই দুটুকরো করে নিতে দুই ছেলেকে  সম্মতি দিলেন। বলা যায় সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ নামক ক্যানসারে বৃক্ষের চারা রোপণ হল যার বিষ ফল আর বিষ বাতাসের জ্বালায় বিগত ৭৩ বৎসর ধরে ভারতীয়দের প্রাণ ওষ্ঠাগত।
কিন্তু, সেদিন জিন্না খুবই স্পষ্টভাবেই পাকিস্তানকে আলাদা মুসলিম রাষ্ট্র হিসাবে দাবী করে দাবীটা আদায়ও করে নিয়েছিলেন। কিন্তু, হিন্দুস্থানকে হিন্দুরাষ্ট্র দাবী বা ঘোষণা করার কথা কেউ দাবী করেন নি সাওয়ারকার ছাড়া। কিন্তু, তখন নেহরুর বা জাতির জনক(!) কারোরই সেই দাবীকে বোঝার ইচ্ছে  ছিল না । "মুসলমানের আহার যা হিন্দুর রান্নাঘরে তৈরী হবে তা খ্রিস্টানদের টেবিলে বসে খাব" এই মানসিকতা রাখা হিন্দু নামধারী 'আওলাদ এ গাজী' জহরলাল নেহরুর মতন উচ্চকোটী সেকুলারের হিন্দুরাষ্ট্রের ধারণা কেন যে পছন্দের ছিল না, সে তো সহজেই অনুমেয়। কিন্তু, বাপু যিনি কিনা জাতির পিতা তিনি কিকরে তাঁর হিন্দু সন্তানদের বেলা সেদিন অন্ধ সেজে রইলেন?
সত্যিই সেকুলার হলে কি এমন অন্ধ ধৃতরাষ্ট্র হওয়া সম্ভব ছিল?
সত্যিকারের পিতা কি করে ছেলেদের হাঁড়ি করতে সম্মতি দিতে পারে?
যদি সেদিন সত্যিই এই অসাম্যের কু উদ্দেশ্যের খেলাটা না হতো, সেকুলারিজম নয় বরঞ্চ তীব্র সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক চালটা না চালা হতো, তাহলে আজকের এই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন CAA সত্যিই দরকার পড়ত?

(২) বর্তমানে দেশের সকল সরকার বিরোধী দলগুলি এবং "আমার কোন রং নেই" বলা তথাকথিত বুদ্ধিজীবীর দল নিজেদের স্বার্থে ইচ্ছাকৃতভাবে দায়িত্ব নিয়ে সাধারণ দেশবাসীকে বিভ্রান্ত ও অস্থির করে তুলছেন এই বলে এই নতূন আইন মুসলিম বিরোধী,  অসংবিধানিক এবং এই  CAA আইন প্রণয়ন মোদী সরকারের ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র ঘোষণা করার ক্ষেত্রে প্রথম পদক্ষেপ।
হাস্যকর হাতিয়ার। সত্যিই বড় কৌতুককর CAA এর সাপেক্ষে এই ব্যখ্যাগুলো।

প্রথমেই যেটা আমাদের বোঝার সেটা হল, ভারতবর্ষ তো বস্তুতঃই হিন্দুরাষ্ট্র। ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্থান, ব্রহ্মদেশ মানে মায়ান্মারসহ  সমগ্র আর্য্যাবর্তই ছিল ভারতবর্ষ। হিন্দু কোন ধর্মের নয় পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ও প্রাচীনতম সভ্যতার নাম।
এবং সিন্ধু নদীর তীরে এই সভ্যতা গড়ে ওঠার কারণে  সিন্ধু সভ্যতার ধারক বাহক বলে ভারতবর্ষের অপর নাম হিন্দুস্থান! সেভাবে দেখলে ভৌগোলিক বিচারে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে আমরা সকল ভারতই হিন্দু । তাই নতুন করে ভারতবর্ষকে নিজেকে হিন্দুরাষ্ট্র হিসাবে পরিচয় দেবার দরকারই পড়ে না।

(৩) এবার আসি নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা CAA কেন অসংবিধানিক নয় তার উত্তরে।
স্বাধীনতার সময় থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত সেইসব দেশ ও ভারতের জনসংখ্যার অনুপাতের উল্লেখ করাটা এখানে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ছে ।
ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ হওয়া দুই ধর্মের মানুষেরই সর্বাঙ্গীণ যে অভূতপূর্ব ক্ষতি সেই সময়ে দেশের   মহান আত্মারা করেছিলেন সেটাই তো শেষ কথা নয়, বরং সেটাই ছিল শেষের শুরু।
শুরু হলো অখন্ড হিন্দুস্থান থেকেই জন্ম নেওয়া ইসলামিক রাষ্ট্রগুলিতে বসবাসকারী হিন্দু জনগোষ্ঠীর উপর নৃশংস অত্যাচার ও হত্যালীলা যা আজ পর্যন্ত ক্রমবর্ধমান।
ভারত থেকেেই বিচ্ছিন্ন হওয়া সাম্প্রদায়িক দেশগুলোর কোনটা নিজেকে ইসলামিক বলে আবার কোনটা নিজেকে গণতান্ত্রিক নামক আলখাল্লা়য় নিজেদের স্বরূপ ঢেকে রাখার ব্যর্থ প্রয়াস করে।
কিন্তু, সেই সবকটা দেশের এজেন্ডা একটাই, হিন্দু নির্মূলিকর়ণ, হয় ধর্মান্তরিত করে না হয় নির্যাতন করে তাড়িয়ে না হয় হত্যা করে।
দেশ ভাগের সময় পাকিস্তানে বসবাসকারী হিন্দু নাগরিককের সংখ্যা ছিল ১২.৯ শতাংশ, যা বর্তমানে এসে দাঁড়িয়েছে ১.৬ শতাংশে, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই জনসংখ্যা ছিল প্রায় ২২.৫ শতাংশ(শুধু সরকারী ১৯৫১ সালের পরিসংখ্যান মতে) যা বর্তমানে ১শতাংশ। কিন্তু, ভারতবর্ষে দেশভাগের সময়ে মুসলিম জনসংখ্যা ছিল মোট জনসংখ্যার ৭(৩৪ মিলিয়ন) শতাংশ যা বর্তমানে বেড়ে ১৭(২০১মিলিয়ন)শতাংশ, তা ও শুধু সরকারি হিসাবে। তবু হিন্দুস্থানই অসহিষ্ণু, Intolerant!
যাইহোক, স্বাধীনতার সময় থেকে প্রতিবেশী দেশগুলিতে এই যে হিন্দু জনগোষ্ঠীর মানুষ যারা ক্রমাগত অত্যাচারিত হতে হতে প্রাণের তাগিদে বিভিন্ন সময়ে ভারতে আশ্রয় নিতে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছেন, তাদেরকে তাদের নাগরিকত্ব দেওয়া ভারত সরকারের একান্ত কর্তব্য । মানবিকতার দায় ও বটে, যা পূরণ করতে পূর্ববর্তী সরকারগুলো বিফল হয়েছিল সদিচ্ছার অভাবে। এই অসহায় নাম গোত্রহীন হয়ে ভারতে বেঁচে থাকা শরণার্থীদের এবং অারো অন্যান্য ধর্মের মানুষরা বৌদ্ধ, জৈন , শিখ আদি যারা ভারতে বাইরে থেকে পাসপোর্টে এসে এখানেই রয়ে গেছেন ফিরে যান নি অথচ তাদেরকে কিছু সহজ পন্থায় ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়াই এই আইন বলবৎ করার উদ্দেশ্য। এই আইন কারো নাগরিকত্ব কেড়ে নেবার নয় বরং নাগরিকত্ব প্রদান করার আইন, যার মাধ্যমে ভারতে আসা শরণার্থীদের মোট সংখ্যার একটা সরকারী হিসেব পাওয়া যাবে। এর সাথে দেশের মুসলিম নাগরিকদের উপর কোন আঁচ আসার বা হিন্দু নাগরিকদের বিশেষ লাভ হবার তিলমাত্র জায়গা নেই। এটাই সংবিধান বিশেষজ্ঞরা বিশ্লেষণ করে বোঝাবার চেষ্টা করছেন। আর যে কোন সুস্থ শিক্ষিত মানুষের পক্ষে এটা বোঝা জলবৎ তরলম।

কিন্তু, না! অত সহজে তো ভারতবাসীকে এটা বুঝতে দেওয়া যাবে না। দিলে যে ভোট বাক্সে টান পড়ছে। কারণ হলো, নাগরিকত্ব সংশোধন আইন CAA এর ভারতবর্ষে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের প্রবেশ পথটা রূদ্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু, তাতে ভারতের বৈধ নাগরিকদের অসুবিধাটা কোথায়? আমি যখন ভারতের একজন বৈধ দেশভক্ত ও সচেতন মুসলিম নাগরিক তখন কি শুধু সমধর্মী হবার কারণে ভারতে চোরাপথে প্রবেশ করে, দশকের পর দশক ধরে আমারই মাতৃভূমির অন্ন সম্পদ সুবিধা ভোগ করে আমারই মাতৃভূমির বুকে ছোরা বসানো অপরাধীদের কোন ভাবেই সমর্থন করতে পারি?
আজ আমরা দেশের সত্যিকারের বৈধ নাগরিকরা যে জনসংখ্যা বিস্ফোরণ, বেকারত্বসহ আরও নানাবিধ জলন্ত সমস্যায় জর্জরিত হচ্ছি তার পিছনের কারণগুলোর মধ্যে একটি অন্যতম কারণ হচ্ছে, আমদের জাতীয় সম্পদে উড়ে এসে জুড়ে বসা এই অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের থাবা।
শুধু তাই নয়, অনেকেরই ধারণা যে, পার্শ্ববর্তী পাকিস্তান, বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসা অহিন্দু  অনুপ্রবেশকারীরা সবাই নাকি নিজেদের অভাব মিটাতে ভারতে আমাদের দেশে এসে থাকেন। যদি তাই সত্যি হয়, তাহলেও ভারতেই কেন? সেই ব্যক্তির ভারতে অবৈধ কর্মসংস্থান হওয়া মানে আমাদের দেশের একজন বৈধ নাগরিকের সে হিন্দু অহিন্দু যে ই হোক তার নায্য অধিকারে থাবা বসানো। সেই অনুপ্রবেশকারী বিদেশি ব্যক্তিরা যদি মুসলিম হোন, তাহলে তিনি পৃথিবীর যে কোন মুসলিম দেশে যান ভাগ্য ফেরাতে। তা না করে 'কাফের' এর দেশ ভারতেই কেন? ভারত পাকিস্তান ম্যাচ হলে, যে ভারতের সাহায্যে একদিন পাক খানসেনার হাত থেকে মুক্তি পেয়ে ভারত দ্বারাই স্বাধীন দেশের স্বীকৃতি মিলল, সেই ভারতেরই পরাজয় কামনা করা হয়, পাকিস্তানের সমর্থনে, তাহলে ভাগ্য ফেরানোর বেলায় ভারত কেন ফেভারিট, পাকিস্তান নয় কেন? বা স্বপ্নের সৌদি আরব নয় কেন? পৃথিবীতে ৫০ টির উপর মুসলিম রাষ্ট্র আছে, বিকল্পের তো অভাব নেই ।

আমাদের অনেক প্রিয় দেশবাসীরা তো এটাও জানেন না যে আমদের অতি প্রিয় 'নিরীহ' বাংলাদেশে কতগুলো এবং কি ধরণের জঙ্গি সংগঠনের অস্তিত্ব আছে, তাদের সঙ্গে ভারতের কোথায় গোপন সংযোগ, কেমন তাদের নেটওয়ার্ক, আর ভারতের রাজনীতির সাথেই বা তাদের কেমন আঁতাত, আর এইসব অপরাধীদের রাস্তা কুসুমিত করছে সীমান্তের ছেঁড়া কাঁটাতারের বেড়া!

আমি একজন ইমানদার ভারতীয় মুসলিম হিসাবে কি চাইব না, এই কাঁটাতারের বেড়া চিরতরে বন্ধ হোক?
নাকি যারা প্রতিবেশী দেশগুলি থেকে বিতাড়িত হয়ে ভারতে অবৈধ প্রবেশ করে আত্মরক্ষার পরেও ভারতেরই হিন্দুদের হত্যা করছে ভারতেরই অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক মদতে, তাদের সমর্থক হব, তাদেরকে ভারত সরকার দমন করতে গেলে তাদের পক্ষ নিয়ে সরকারের বিরোধীতা করব, সরকারকেই উল্টে হত্যাকারী বলে দেশে 'বিক্ষোভ' নামক দেশদ্রোহীতা চালাব, কেঁদে কেটে সাদাকে কালো বানিয়ে ফেসবুকে কালাদিবস পালন করার পোস্ট দেব?

নিশ্চয়ই না, তাই না?

অপরদিকে, যে সব হিন্দু শরণার্থী বিভিন্ন সময় শুধু হিন্দু হবার অপরাধে আমাদের প্রতিবেশী ইসলামিক দেশেগুলি থেকে অত্যাচারিত বিতাড়িত হয়ে আমাদের দেশে প্রাণের তাগিদে এসেছেন, তারা ভারতবর্ষে যদি স্থান না পান তাহলে তারা কোথায় যাবেন? পৃথিবীর সব এমনকি ভারতীয় মুসলিমদের কাছেও স্বর্গ হলো আরব। আর তাঁদের বর্তমান প্রজন্মের অনেকেরই অজানা যে, তাঁদের জন্নত আরব একদিন ভারতেরই অংশ ছিল, এবং সেখানকার মানুষরা ছিলেন সনাতনধর্মী। এটা কোন কল্পকাহিনী নয়, পৃথিবীর বুক থেকে ইসলামিক আগ্রাসনের ফলে হিন্দুদের ক্ষয়ে যাবার, সংখ্যায় কমে যাবার, নিজ ভিটে জমি থেকে বিতাড়িত হবার যন্ত্রণাময় ইতিহাস, যার ধারা আজো অব্যাহত।
তাই, বর্তমান ভারতবর্ষই পৃথিবীর নির্যাতিত, জোর করে নিজের ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ হওয়া হিন্দুদের একমাত্র এবং শেষ আশ্রয়। তাঁদের ত আর ৫২ টি বিকল্প দেশ নেই, আশ্রয় নেবার মতন। পৃথিবীতে হিন্দু দেশ যে মাত্র একটাই, বর্তমানের ভারত।

এই শরণার্থী হিন্দুদের যাতে কুকুর বিড়ালের মত নয়, মানুষের মত বাঁচার অধিকার পান, তাঁদের জন্যে ও আগেই বলেছি বৌদ্ধ ,জৈন আদি যারা পাসপোর্টে ভারতে এসে ফিরেও যান নি অথচ নাগরিকের  পরিচয় ছাড়াই এদেশে আছেন তাঁদের ভারতের নাগরিক অধিকার দেবার জন্যে এই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন।
এতে ভারতের বৈধ মুসলিম নাগরিকদের ক্ষতি হবে এই ভুল কথাটা সাধারণ মানুষদের বুঝিয়ে নিজেদের স্বার্থে, আর যারা এই ভুলটাকেই ঠিক ধরে নিয়ে দেশ মাথায় করছেন, সত্যিই তাদের বিচার বুদ্ধির দৌড় দেখে করুণা হয়।

ভারতের মুসলিমরা যদি পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় সবচেয়ে বেশী সুখী হয়ে থাকেন, তাহলে এটাও ঠিক পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারতের   মুসলিম নাগরিকরা অনেক বেশী উদার, সচেতন এবং দেশপ্রেমিক। তাঁদের কাছে উন্মাদ ধর্মান্ধতা থেকে দেশ অনেক বড়। তাই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের মাধ্যমে যদি নিজের দেশে এই সর্বনাশা অবৈধ  অনুপ্রবেশ রোধ করতে সহায়ক হয়, তাঁদের ত এই আইনের বিরোধ নয়, বরং ১০০% সমর্থন দেওয়া উচিত এবং অনেক প্রকৃত শিক্ষিত মস্তিষ্কের মুসলিমরা সমর্থন দিচ্ছেন ও।

কিন্তু, দূর্ভাগ্য যে, বিভিন্ন মুসলিম সংগঠন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সত্যিটা জেনেও  নিজেদের কদর্য স্বার্থে এই দেশ হিতকর আইনের বিরোধীতা করে আন্দোলনের নামে সরাসরি দেশদ্রোহীতার চক্রান্ত চালাচ্ছেন।
আসলে তারা ঠিক কি চাইছেন?

অসহায় হিন্দু শরণার্থীদের ভারতের নাগরিকত্ব না দেওয়া? নিজ দেশের সাম্প্রদায়িক হিংসার শিকার এই নিরপরাধ হিন্দুরা তাহলে নিপাত যাক? তাদেরকে নাগরিকত্ব দিলে ভারতীয় মুসলমান নাগরিকদের কোথায় কিভাবে ক্ষতি? না কি সরকারী খাতায় পত্রে কিছু অসহায় হিন্দুর নাম উঠে যাবে, সেই জ্বালায় জ্বলছেন তারা?

তাদেরকে মনের দ্বিতীয় গোপন ইচ্ছেটা কি? অসহায় সহায় সম্বলহীন হিন্দুদের সাথে বা তাদের বদলে অহিন্দু অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের যারা ভারতে ঢুকে হিন্দুদের হত্যা করে, ভারতের বুকে ক্যনসারের মত ছড়িয়ে পড়ছে তাদেরকেই  ভারতের নাগরিকত্ব দিয়ে দেওয়া আর সীমান্ত খুলে আহ্বান জানানো?

শরণার্থী আর অনুপ্রবেশকারীদের ভারতে আসার কারণ ও উদ্দ্যেশ কি এক?

এই আইনের ফলে ভারত হিন্দুরাষ্ট্র ঘোষিত হতে চলেছে বলে দেশে তাঁরা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ঘটাতে বদ্ধপরিকর। তাহলে কি আসলে হিন্দুরাষ্ট্রের ভয় নয়, বরং ভারতকে মুসলিমরাষ্ট্রের পরিণত করার "গজবা এ হিন্দ" স্বপ্নটা অপুরণ হবার আশঙ্কা!??

কেউ বলছে হিন্দুদের থেকে আজাদী চাই। যারা বলছে তারা নিজেরা ই সবচেয়ে ভাল জানে একজন মুসলমান ভারতে যতটুকু আজাদ ততটুকু পৃথিবীর আর কোথাও নয়, কোন মুসলিম দেশেও নয়। হিম্মত কোন মুসলিম দেশে দাড়িয়ে কোন হিন্দু এইভাবে আজাদীর স্লোগান দিক্! কোতলে আম হয়ে যাবে। নীরব থেকেই হচ্ছে। আজাদী চাও, বেশ তো, আজাদ হয়ে চলে যাও পঞ্চাশটি মুসলিম দেশের যে কোন একটায়। তা নয়, 'আজাদী' চাই এদেশে থেকেই!কিভাবে? হিন্দুদের দেশেই "Fuck Hindutwa" বলে না 'গজওয়া এ হিন্দ' করে? আর তারই সরব নীরব সমর্থক প্রদীপের সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু সেলিম, আরিফ, কামাল বা পূজার বেস্ট ফ্রেন্ড আয়েশা, শামিমা, আনোয়ারা রা!!?? হায়রে বন্ধুরা সারাজীবনের দেওয়া ভালবাসা তোমাদের হৃদয়ে তাহলে কোনদিনও রেখাপাত করতে পারেনি? ভারত তোমাদের কি দেয়নি! সমান অধিকার সম সুখ সম সম্মান, তবুও ভারতের পবিত্র মাটিতে জন্মেও নিজেকে সর্বাগ্রে ভারতীয় নয় মুসলমান ভাবছো?

আর যে সাধারণ মুসলিম জনগণ এই সংগঠন বা রাজনৈতিক উষ্কানীতে পো ধরেছেন তারা কি একবারও এই নগ্ন সত্যিগুলোকে বোঝার চেষ্টা করবেন না নাকি ইচ্ছেকৃতভাবেই না বোঝার ভান করছেন? তারাও কি হিন্দু শরণার্থীরা ভারতেও ঠাই না   পেয়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাক আর ভারতে অহিন্দু অবৈধ অনুপ্রবেশ বজায় থাকুক? আর তাহলেই বুঝি ভারতীয় মুসলমানদের নাগরিকত্ব সুরক্ষিত হবে?
আশ্চর্য অন্ধ অশিক্ষিত চিন্তাধারা!

ভারতের শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মুসলমান নাগরিকরাও কি তাহলে ভারতকে মুসলিম রাষ্ট্র হিসাবেই দেখতে চাইছেন? সত্যি কথা সদাই অপ্রিয়। কিন্ত, এসবই একেবারে তলিয়ে বোঝার, বিবেচনার এবং মানবিকতার বিষয়।

আর তারা যদি তা না চান, তাহলে কিসের ভিত্তিতে তারা CAA এর বিরোধ করছেন?
এটি হিন্দু-মুসলিমের বিষয়ই নয়, যার সাথে সেটাকে কিনা "আজাদী(!)" পর্যন্ত টেনে নেওয়া হচ্ছে! নোংরা রাজনীতি আর মূর্খামির একটা সীমা থাকে!

আমি যখন একজন হিন্দু নেতা বা নেত্রী, তখন কেন CAA এর বিরোধীতা করছি? আমি সেকুলার বলে? নাকি যেখানে আমার ভোটার সংখ্যাই 60 হাজার সেখানে নব্বই হাজার ভোটের জাদুটা এবার থেকে আর চলবে না বলে? ভোটের দিন "না জানে কাহা সে আতে হ্যাঁয়, না জানে কাহাকো যাতে হ্যাঁয়, এই ভুইফোড় ভোটার।

ক্রমশঃ

Thursday, 7 November 2019

যখন দুঃসময়

ভুলগুলো কখনো ভুল
কখনো আবার পাপ
কান্না রাগ কিংবা হয়তো
রক্ত চাপ চাপ

তোমার কষ্ট সবটুকুই
হয়তো আমার জন্য
আদিম পৃথিবীতে
হাত পেতে হচ্ছ বিপন্ন

দুই চোখে চেয়ে থাকে
অসহায় দুটো মুখ
সুযোগ বুঝে  পিশাচের দল
লুটতে চায় সুখ

কেউ হাসে কেউ ঠকায়
চক্রান্ত তলে তলে
দুঃসময়ে পিপড়েরাও
কামড়ায় দলে দলে

কেন তোমরা জটিল হলে না
কেন এতটাই সরল
শিখালেনা দুনিয়াদারি
নিচ্ছি রোজ গরল

কেউ ভাবছে করবে শিকার
কেউ ভাবছে করছি
সারাটা জীবন দুঃসময়
তাই নীরবে গুমরে মরছি

অন্যায়ীরা দলে ভারী
একসুর একজোট
সতের ভাত কবেই জোটে
সদাই দলছুট

জীবন থেকে মৃত্যু সহজ
তবু বাঁচতে হয়
মিথ্যা অপবাদ কর্মফল
সবটাই গায়ে সয়।।

Monday, 21 October 2019

Thursday, 8 August 2019

Ignoring Brahmanatwa

You can insult or hate Brahmins but not the "Bhahmanatwa" if...if you consider yourself as a real Hindu.
Because, Brahmanatwa is not a caste but an Ideology, to which the intellectual practice of Sanatan is directly related. It is about specific GUNAs...with these GUNAS even a Chandal can become a Brahman. Brahmatwa is a sacred lifestyle supportivevto find out the path of Moksha, Brahmantwa is another name of sacrifice. If one is insulting neglects brahmanatwa he or she is ignoring Lord Vishnu who himself is the Param Brahmana, they are disrespctful to Chanakya and Aryabhatta too. They are showing disregard to Spiritualism, Spiritualism is not the weakness if fools but the weapon of wise, strength of Significance of Sanatans, of Hinduism...that makes Sanatan as the Superlative of all believes and religions If if Sanatan is a body then Brahmanatwa is it's brain ..even more then that. Wisdom of Sanatani practice.

In Hinduism, Brahman connotes the highest Universal Principle, the Ultimate Reality in the universe in major schools of Hindu philosophy,

Many believe that the groups originated from Brahma, the Hindu God of creation. At the top of the hierarchy were the Brahmins who were mainly teachers and intellectuals and are believed to have come from Brahma's head

Brahmanatwa is not something can described in aa silly debate competition or face book status.😉
Brahmanatwa is our rastradharma not Brahmanwabad. You as a Hindu can hate the Brahmin caste..but as a Sanatan follower you can't disrespect, insult, ignore or overlook the ideology named, "Brahmanatwa".
Read...learn...understand...atleast try little bit to realise these phenomenons....your root...educate you inner self first. If you can't do that then claim yourself as a Hindu but not as Sanatani.

Creator or Writer of Vedas| Few Words

Parashar is a Brahmin gotra found in northern India. This community is found in, Punjab, Haryana, Chandigarh, Delhi, Rajasthan , Uttar Pradesh. The Parashars are descendants of the Vedic scholar Parashara who was grandson of Maharishi Vashishth and father of Vyas. Many people belonging to the gotra use the surname Parashar. Alternative spellings include Prashar, Parasar, Prasar, Parasara, Prasher, Parashar and Parasher. Some of them also use the surnames Vashishth and Vyas.

Vyasa
Vyasdeva, son of rishi Parasar was the creator of Great Epic "Mahabharata" & "Vedas"
As he wote Vedas that's why He was known as VedaVyas also. Vyas credited Brahma as the creator of Vedas in Mahabharata. Thus it can be said the Brahma was the creator of Vedas and Vyas was the narrator of Vedas.

According to tradition, Vyasa is the compiler of theVedas, who arranged the four kinds of mantras into four Samhitas (Collections). There are four Vedas: the Rigveda, the Yajurveda, the Samaveda and the Atharvaveda.

The Vyas (or Bias) are a Brahmin community found in the Indian states of Haryana, Punjab, Rajasthan, Uttar Pradesh and Delhi. They trace their origin to Gujarat.

So, we can conclude with the fact that Vedas was created and then written by Brahma and Vyas respectively who were Brahmins.

(Source: Wikipedia)