Thursday 16 January 2014

কোষ্ঠীবদল

দাদা, একটা কবিতা লিখবে
আমাকে জিতিয়ে দেবার?
কেউ না জানুক, তুমি ত জানো
আমি যে মেনেছি হার!

বিশ্বাস কর, সেই ছোট থেকে
ভাগ্যের রেখাটা সদাই গেছে বেঁকে
দিয়ে গেছি আদর
নিয়েছি শুধুই প্রহার!

আসলে পাপ, জান ত!
নাহলে কষ্টগুলো এমন কেন হত?
মাকে জ্বালিয়েছি এত, জ্বালাই
জ্বালাব রোজ প্রতিনিয়ত!

সদবংশজাত, তবু অভিশপ্ত
জন্মে উল্কার মত,
আছড়ে পড়ে পৃথিবীর বুক করেছি নীল,
মাতৃজঠরে ক্ষত!

কিসের অভাব বল?
মন্ডামিঠাই রাশি
পূজোতে বেণারসী
মা দিয়েছে নিয়েছি লোভীর মত।

পরা হয়নি জান,
দেখতাম মাঝে মাঝে,
ফেটে যাচ্ছে, আমার জীবনের মত
জায়গায় জায়গায় ভাঁজে ভাঁজে!

কেন পারিনি বল, না না তুমিই বল,
এমন কেন ঘটে?
যারা অনেক সুখী
তাদেরও দেখিনি যে এতকিছু জোটে!

খুব বিত্তশালী নয় বোধহয়
মায়ের বিত্তের বৃত্ত হৃদয়
মা বাপের অন্নধ্বংস
আর অস্তিত্ব করেছি ক্ষয়।

কোনদিকে কাজের  নই,
অসাফল্য আমার সই
যেদিকে বাড়িয়েছি হাত
সর্বনাশের ধারাপাত,

এমন কেন হল?
আমার সবটাই জলো?
মাঝেমধ্যেই ভাবি,
পূর্বজন্মের পাপে খাই খাবি!

সন্তান ছাত্রা সখি
এ যাত্রায় আমি ফাঁকি
আমার সব পরীক্ষায় ফল
নাস্তানাবুদ, হলাহল।

জীবনের সব অলিগলি
সব ঘুরেফিরে পড়ে গিয়ে
দূর্ভাগ্যের বড় রাস্তার মোড়ে,
আর আমিও চলি।

এখন কি মনে হয় জানো?
বুঝি নিতে পারি ভগবান বেটার জান ও!
একটা মেয়ের সুখ তার কি সহ্য হয়?
পুরুষ বই ত নয়!

কষ্ট দিল বলে বলিনা,
মনটা দিল বলে
এত কিছুর পরেও
ভরছে না ছলে-জলে!

গোড়ায় একটা গলদ আমার
মনটা মাথায় মোটা
বিবেকের খোঁটায় বাঁধা
হচ্ছে না যে চামার!

যেখানেই যেভাবেই তারে লুটাই ভুলে
সেখান থেকেই আঙ্গুল তুলে
মনশিকারিরা স্বার্থশেষে
পোড়ায় তারে দলে দলে।

বাপ মায়েরা বড্ড বোকা!
বানালো না চারচোখা,
শেখালো না ধান্দাবাজী,
হারছি, তাই জীবন বাজী।

বন্ধু ভাই গোষ্ঠীজ্ঞাতি,
জগৎজোড়া তাদের খ্যাতি
পারিনি তাদের মত হ'তে
ভাসতে গড্ডালিকার স্রোতে

স্বার্থপরতা জীয়নকাঠি
না চিনলে জীবন মাটি!
জান দাদা, সব্বাই চেনে
আমি চিনিনা এটাও জানে

গোপন ব্যথা বলতে আসে
ছড়াবে না জানে বাতাসে
তারাই আবার পাগল বলে
কাজ ফুরালে জোটে হাসে

অভিযোগ কোথায় করছি বল,
করছি কেবল মনটা নিয়ে
যারা তারে পিষে মারে
তাদের তরে ভেবে মরে,
পারেই বা কেমন করে!!

হতাম যদি কামজোয়ারি
বোধহয় কেউ কভু না দিত আড়ি
স্বার্থ হত মাখামাখা
স্বার্থক হত জীবনরেখা।

বোকার মত করলে উজাড়,
নিজেই নিজেকে করলে বেজার
শিকারি হাসে শিকার দেখে
রক্ত মেখে চোখে মুখে

ভয়াবহ এঁদোগলি
হাড়ের উপর হারের খেল
মনের সাজা যাবজ্জীবন
পরীক্ষাতে ডাহা ফেল।

একটি কাজ করবে দাদা
একটি ছোট্ট জিত-কবিতা,
লিখবে মনের মত করে
এই একটুখানি ঘটা করে?

নয় ঘটনার ঘনঘটা,
বলবে মনের জিতের কথা
বলব কি আর সব ত জান
যদি তারে সত্যি মান!

কারো কাছেই নইকো দামী
আমার কাছেও নয় 'আমি' টা,
কোষ্ঠীটা বদলে দিও
মনের মত গড়ে দিও,
অলীক আমার সেই ছবিটা

পেলাম না যা ধরার 'পরে
ধরে দিও আমার তরে,
একটি বার শুধু একবার
খাই না যেন  ভাগ্যের মার!

চাইব একটি জিনিস আরো
শুধু তুমি তুমিই দিতে পার
দিও দাদা সেই মনিহার,
'হারিয়ে যাওয়া সময়' আমার

একটুখানি ছিলো খাঁটি
বাকিটা কেবল শুধুই মাটি
সেইটুকু খাঁটি নিয়ে
আর জনমে জনম নিয়ে

কাঁচের দেওয়াল ভাঙার পরে
যেন আসে হাজার বছর পরে
আমার সম্পূর্ণতা
সব অসম্পূর্ণতার পরে,
ফিরিয়ে দিও শুধু আমার করে,
আমার জিত তোমার করে॥

                             

                                           (দাদাকে...)

No comments:

Post a Comment