Saturday, 29 November 2014

তোর দেশে

আমি আবার তোর শহরে গেছি
জানিস ?
তুই জানিস না।

কোথাও কি মিল আছে
আগের বারের মত?
সেটা আমিও জানিনা।

কখনও ভাবি, বুঝলি?
জীবন না বড্ড এলোমেলো---
কখনও ভারী কখনও জলো।

মন মানে ধূলো একমুঠো
জোয়ারে ভেসে জড়ো
কড়ি খরকুটো

ভাবা ফাঁকি কোনটা কি
মন শুধু জানে
অগোছালো অবাধ্য জীবনের মানে।

এত এত দিয়ে যায়
ফুরোয় না তবু
শূন্য তার কোষাগার
ভাবে না কভু

কতকিছু ঘটে গেলো
তোর আগে পরে
সবই মনে পড়ে আর সবই মনে ধরে

মাথা বলে মনটারে
চল এবার ঘুমাই
পারছি না মন বলে
কাজ আছে তাই

তুই তো জানিস
আমি নিতে পারি কত
তোর দেওয়া আঁচড়ই ত
কত শত শত

বেয়াড়া এ মনটা
খালি হতে হতে
ভরে কেন ওঠে জানিস?
আরো খালি হতে।

আমি বলি মন শোন
আমি খালি হাত
খেয়ালী সে ভেবে বসে
খালি পাঁচসাত

কোথাও আছে বুঝি
আজও দেওয়া বাকী
সব যদি দিয়ে দেই
সে যে পাবে ফাঁকি

জানিনা সত্যিই
কোথায় তার বাস
এমনও নয় যে
তাকে খোঁজার বড় আঁশ

তবু যদি এসে পড়ে
দিতে হবে সাড়া
কাজটি হবে খাঁটি
নয় দায়সারা

সব জানে সব বোঝে
তবু হচ্ছে খরচ
মনটার মোর প্রতি
নেই কো গরজ

জোর করে বেঁধে যদি
খাঁচা দেই তারে
ঝাপটায় ডানাদুটো
পড়ে থাকে মরে

বাঁচামরা দুই ই চাই
অসাধ্য সাধন
দমবন্ধ করে রাখে
জীবন বাঁধন

আর কত দেব বল
তোকে দিয়ে ফাঁকা
মরা শাখে লেগে থাকে
শালিকের পাখা

এই যদি হয় আজ
জীবনের দাবী
কি হবে মনটার একথাই ভাবি

কত আর দেব বল
আর কত বারে
সবই যে থাকে মনে সবই মনে ধরে!

Thursday, 27 November 2014

আরো একবার

থাকবে কিনা আমি জানিনা
কি হবে শেষ পর্যন্ত
আমার অভিমান সময়ের অবদান
আর কিছুটা ষড়যন্ত্র

যাওয়া-আসা স্রোতে ভাষা
চলছে বিশ্বময়
জোয়ার ভাটা চোখের বালি
আমার কর্ম নয়

যারা এসে ফিরে গেল
সবই খেলার ছল
পলিজমা নদীর কিছু
শুকিয়ে যাওয়া জল

কোথা থেকে আসছে রোজ
এত খোলা হাওয়া
সঞ্চয় যে আমার শুধু
কেবল আসা যাওয়া

কেমন করে দিচ্ছ এত
কেমন করে পার
কিসের তরে কিসের জোরে
কাড়ছ অনেক তার ও!

বেহিসেবী হিসাব খাতায়
অংক গোজামিল
পাতায় পাতায় কাটাকুটি
ব্যর্থতায় সামিল

আকাশ তুমি হতেই পার
রাখছি না সংশয়
গোধূলিতেও ঝড় যে ওঠে
সে ও তো মিথ্যে নয়

কত আর বলব বল
কিছুই বলার নেই
শুনেছি নাকি মাঝেমাঝেই
হারিয়ে ফেল খেই

কিকরে বুঝবে তুমি
একটুখানি কথা
না ই যদি বুঝতে চাইলে
আমার নীরবতা

********************
মনে পড়ে? বলেই ছিলেম, 
আমার হাতে থাকে কম ই
কথা দিয়ে কথা ফেলে
হারিয়ে গেলে তুমি

.........................................


PHOTO: FROM A GIFT BOX (SUBRATA DAS PHOTOGRAPHY)

Wednesday, 5 November 2014

অপার্থিব


নীলপরীটা দেখেছ মা?
সে অভিশপ্ত

কেথার চেন?
সে ও তারই মত।

আমি  তোমার গর্ভে
বেড়েছি সগর্বে
করেছি কেবল ক্ষত

এটা হওয়ার ছিলো
তুমি কষ্ট পেওনা।
অপার্থিব আমি
তোমার পাওনা॥ 

আমি এসেছি কি না
ঠিক জানি না,
ওই নীলহ্রদ থেকে
যেখানে রাস্তা ডাইনীর মত
মিলায় এঁকেবেঁকে

ওখানেই কেউ থাকে
চোখে চোখে রাখে
আমায় হতে দেয় না আমি

বা, হয়তো এটাই আমি
বাসিন্দা.....
জীবন যেখানে অজাগতিক
আমি সেখানকার পথিক

আমি আলাদা অচেনা
অপদেবতার মুখের গ্রাস
খারাপ বাতাস
সর্বনাশ!

তোমার, কারোর না বোঝা।
তার এটাই কারণ
আমি ভয় অন্যধরণ,
বিনাশ

বলার ছিলো তোমায়
অনেক কথা আমার
চিনিয়ে দিতে আমায়
বলা হল না

আঁধার রাত আমি
দুঃস্বপ্নের ফসল
হয়তো কর্মফল
তুমি কষ্ট পেও না।

যুগ যুগ ধরে
আমার চলা ছায়াপথ ধরে
পথটা আমায় ডাকে
হাতছানি দেয়
নিকষ কালো বাঁকে

আমার মুক্তি মৃত্যুঝিলে
কালো প্রজাপতি উড়ছে অনর্গল
আমার বাসী ঠিকানা
কোন বরফপরা রাতে
ডুব দেব তাতে

সবুজ তারাটা
যখন হাসবে চোখ টিপে
জেনো, হারিয়ে গেছি আমি
তখন কষ্ট পেওনা,
হয়তো আসব না॥

Monday, 3 November 2014

অ-সম

বন্ধু আমার নাবিক সে
সূর্যোদয়ের দেশের
আমি ফিকে রং আকাশে
হয়ত বেলা শেষের

হাজার রকম স্বপ্ন নিয়ে
সে উত্তুরে হাওয়া
আসমুদ্রহিমাচল
তার নিত্য আসা-যাওয়া

দেখছি তাকে দূর থেকে
কতটুকুই বা জানি
ডাকলে বন্ধু বাড়ায় হাত
এটুকুই মানি

জানে সে অনেককিছু
জানার নানান বোঝা
আমার মাথায় প্রশ্নবোধক
পালক কতক গোঁজা

অজস্র জানতে চাওয়া 
জাহাজ-প্রমাণ বহর
জেরবার করছি রোজ
নিত্য অষ্টপ্রহর

নিঃস্ব আমি,জানার জগৎ
ধূসর যেন মরু
খাপছাড়া বন্ধুত্বে
দুটি পৃথক মেরু

অন্তর্মুখী মন মননে
প্রকাশগুলো চাপা
আমি ঠিক তার বিপরীত
প্রগলভতায় খেপা

রাতদিনের ব্যবধান 
আমার শতেক ভুল
অসম বন্ধুত্বটা
তবুও রোজই নির্ভুল ।




Dedicated to my friend,
Subhadeep Bhattacharjee.




PHOTO:SUBHADEEP BHATTACHARJEE

Thursday, 2 October 2014

মা তোমাকে

ওরা কেউ বোঝেনা মা মনহীন সব কায়া
চোখে রঙের আতশবাজি মনমহলে ছায়া

তারাও তোমার আমিও তোমার ফারাক কেন এতো
তিনটি তারায় মেপে নিও দুঃখ আমার যত

ভক্ত নই ভক্তিহীন ক্লান্ত নিশিদিন
শক্তি আমার অনুমাত্র  সে ও তোমার ঋণ

ক্ষুদ্র আমার নিজের জগৎ দুঃখ নিয়ে বাঁচা
দুনিয়াদারীর মোকাবেলায় মন নিছকই কাঁচা

জীর্ণ আমি হৃদয় ক্ষত করছে যে জেরবার
সন্তানরা নিষ্ঠুর সব বিভেদ যত তোমার

কর্মফল হয়তো আমার হয়তো তোমার মায়া
দীপ্ত করে দূর কর সব দীনতা সর্বজয়া॥

Photo: Collected

Saturday, 20 September 2014

শব-ভীড়


কিলবিল সব পোকার মত
ঘুণ ধরায়
খুবলে খায়
পৃথিবীর বুকে করে ক্ষত

রোজ তারা সারবাঁধে
খুঁজে বেড়ায়
যে যার মত
অগুন্তি রোজ নামে পথে

কেউ দুটো পাথর খুঁজে
ভাঙবে ব'লে
কেউ বা মূর্তি বানায়
রোজকারটুকু নেয় বুঝে

কেউ দিনশেষে কানাগলি
বাকী চাটুকার
ঘরেবাইরে
মুখোশের গলাগলি

নেকাবোকাদের ঢল
বাঁধানো দাঁত
বিষহাসি
দিনরাত ছল

ছড়িয়ে পড়ে
জীবানু যত
খল বেঁচে থাকা
জীবিকার মত

শহরজুড়ে
শবদের ভীড়।
মানুষ মানে
মাথা আর শরীর॥










Photo: Collected

Saturday, 13 September 2014

শেষটুকু

মন ভালোবাসে কেবল ভালোবাসে
অনেকখানি নয় একটুখানির আশে
সাতমহলা বাড়ি নয় ছোট্ট ভাল বাসা
একফালি বাগানঘেরা অনেক দিনের আশা
আলাদিনের প্রদীপ নয় সন্ধ্যাবেলার বাতি
বাতিল করে ইটপাথর তুলসীতলার মাটি

রুদ্ধশ্বাস হাইওয়ে হাইস্পীড শর্টকাট্
কীটের বাসা ফুলফল বন্ধ্যা সবুজ মাঠ
বদলের হওয়ার পাগল দূষণ পোষণ সার
লোভের আমি লোভের তুমি সম্পূর্ণ অসার
বিষের কালো ধোঁয়াশায় ঝাপসা শরীর মন
বিপন্ন আকাশ আমার মেঘলা অনুক্ষণ

অনেকদিন হল জীবন এখন বাসি পুরো
শহরের মেকি মুখোশ নকল গানের সুর ও
দাঁত কেলানো হাসি আর গড্ডালিকার ঢেউ
পালের গোদা নষ্ট রাজা বাদবাকি তার ফেউ
অভিনয় কূটকাচালি স্বার্থবুদ্ধি প্রখর
হাতে হাত মেলায় সবাই লুকিয়ে রাখে নখর

এমনভাবে বাঁচতে যাওয়া আমার চাওয়া নয়
বর্ধিষ্ণু জীবন ভারী হচ্ছে কেবল ক্ষয়
একটুকরো নীল সবুজ শান্ত নদীর পাড়
পাখপাখালি গাছগাছালি মানুষ চাই না আর
শেষ বিকেলে সূর্য পাটে আমি নদীর পাশে
মাটির বুকে পাতব মাথা জোৎস্না তখন কাশে।